এ পর্বে আলোচনা করা হবে কে বেশী জ্ঞানী ও শক্তিশালী- মোহাম্মদ নাকি আল্লাহ? প্রকৃতই আল্লাহই বা কে? এবার দেখা যাক নীচের হাদিসটি-

আল বারা বর্ণিত- এ আয়াত নাজিল হলো- “যারা অলস ভাবে বসে থাকে তাদের মর্যাদা যারা আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করে তাদের সমান নয় (৪:৯৫)” নবী বললেন, “ যায়েদকে ডাক আর তাকে কালি ও হাড় আনতে বল”। অত:পর তিনি বললেন-“ লেখ ‘যারা অলসভাবে বসে থাকে—–” এবং তখন আমর বিন মাখতুম নামের এক অন্ধ লোক নবীর পিছনে বসে ছিল, সে বলল- “ হে আল্লাহর রসুল! আমার জন্য আপনার হুকুম কি রকম , আমি তো অন্ধ?” সুতরাং উক্ত আয়াতের পরিবর্তে নিচের আয়াত নাজিল হলো:
‘ যারা অক্ষম তারা বাদে যারা ঘরে বসে থাকে তাদের মর্যাদা যারা আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করে তাদের সমান নয়(৪:৯৫)’ সহি বোখারি, বই-৬১, হাদিস-৫১২

দেখা যাচ্ছে মুহুর্তের মধ্যে কোরানের আয়াত পাল্টিয়ে ফেলছেন মোহাম্মদ। কোরান যদি আল্লাহর তত্ত্বাবধানে থাকে আর আল্লাহ যদি সর্বজ্ঞানী হয়ে থাকে, তাহলে প্রথমে নিশ্চয়ই সে জিব্রাইলের মাধ্যমে ভূল বা অসম্পূর্ন আয়াত পাঠাতো না।অথচ প্রথমে যে আয়াত নাজিল হয়েছিল তা ছিল ভূল, অন্তত: নিদেন পক্ষে অসম্পূর্ন আয়াত। আর এর অর্থ কোরানের আল্লাহ সর্বজ্ঞানী নয়। আর মোহাম্মদ সাথে সাথেই অসম্পূর্ন আয়াতকে সম্পূর্ন করে তা যায়েদকে লিখে রাখতে বললেন।এতে কি বোঝা যায় না যে মোহাম্মদ আল্লাহর চাইতেও বেশী জ্ঞানী? এবং মূলত: তিনি নিজেই আয়াত বানিয়ে তার সাহাবীদেরকে লিখতে বলেন? অন্য কথায় তিনি নিজে যা বলেছেন সেটাই আসলে কোরানের আয়াত তথা কোরান ?

এছাড়া দেখা যায় কোরানের অনেক আয়াত মোহাম্মদ এমনকি তার সাহাবিদের ইচ্ছার কারনে নাজিল হয়েছে।কোরানের বানীতে বার বার একটা আয়াত দেখা যায় তা হলো তিনি শুধুমাত্র একজন সতর্ককারী মাত্র, যেমন –

আপনি বলে দিন, আমি আমার নিজের কল্যাণ সাধনের এবং অকল্যাণ সাধনের মালিক নই, কিন্তু যা আল্লাহ চান। আর আমি যদি গায়বের কথা জেনে নিতে পারতাম, তাহলে বহু মঙ্গল অর্জন করে নিতে পারতাম, ফলে আমার কোন অমঙ্গল কখনও হতে পারত না। আমি তো শুধুমাত্র একজন ভীতি প্রদর্শক ও সুসংবাদদাতা ঈমানদারদের জন্য।সূরা-আল- আরাফ-৭:১৮৮ ( মক্কায় অবতীর্ণ)

কাফেররা বলেঃ তাঁর প্রতি তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে কোন নিদর্শন অবতীর্ণ হল না কেন? আপনার কাজ তো ভয় প্রদর্শন করাই এবং প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্যে পথপ্রদর্শক হয়েছে। সূরা রাদ ১৩:৭ ( মক্কায় অবতীর্ণ)

আর সম্ভবতঃ ঐসব আহকাম যা ওহীর মাধ্যমে তোমার নিকট পাঠানো হয়, তার কিছু অংশ বর্জন করবে? এবং এতে মন ছোট করে বসবে? তাদের এ কথায় যে, তাঁর উপর কোন ধন-ভান্ডার কেন অবতীর্ণ হয়নি? অথবা তাঁর সাথে কোন ফেরেশতা আসেনি কেন? তুমিতো শুধু সতর্ককারী মাত্র; আর সব কিছুরই দায়িত্বভার তো আল্লাহই নিয়েছেন।সূরা হুদ-১১:১২ ( মক্কায় অবতীর্ণ)

আমি আপনাকে সুসংবাদ ও সতর্ককারীরূপেই প্রেরণ করেছি।সূরা ফুরকান-২৫:৫৬ (মক্কায় অবতীর্ণ)

এবং যেন আমি কোরআন পাঠ করে শোনাই। পর যে ব্যক্তি সৎপথে চলে, সে নিজের কল্যাণার্থেই সৎপথে চলে এবং কেউ পথভ্রষ্ট হলে আপনি বলে দিন, আমি তো কেবল একজন ভীতি প্রদর্শনকারী। সূরা নমল-২৭:৯২(মক্কায় অবতীর্ণ)

তারা বলে, তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে তার প্রতি কিছু নিদর্শন অবতীর্ণ হল না কেন? বলুন, নিদর্শন তো আল্লাহর ইচ্ছাধীন। আমি তো একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র।সূরা আল আন কাবুত- ২৯:৫০ ( মক্কায় অবতীর্ণ)

বলুন, আমি তো একজন সতর্ককারী মাত্র এবং এক পরাক্রমশালী আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই।সূরা ছোয়াদ- ৩৮:৬৫(মক্কায় অবতীর্ণ)

বলুন, এর জ্ঞান আল্লাহ তা’আলার কাছেই আছে। আমি তো কেবল প্রকাশ্য সতর্ককারী।সূরা আল মুলক- ৬৭:২৬ (মক্কায় অবতীর্ণ)

যে একে ভয় করে, আপনি তো কেবল তাকেই সতর্ক করবেন।সূরা আন নাজিযাত-৭৯:৪৫(মক্কায় অবতীর্ণ)

বলুনঃ হে লোক সকল! আমি তো তোমাদের জন্যে স্পষ্ট ভাষায় সতর্ককারী।সূরা হাজ্জ-২২:৪৯ (মদিনায় অবতীর্ণ)

উক্ত আয়াতগুলোতে দেখা যাচ্ছে মোহাম্মদকে শুধুমাত্র একজন সতর্ককারী রূপে প্রেরণ করা হয়েছে আর খেয়াল করতে হবে মাত্র একটি বাদে বাকি ৯ টি আয়াতই নাজিল হয়েছে মক্কাতে যখন মোহাম্মদ ছিলেন খুবই দুর্বল আর তার অনুসারী ছিল হাতে গোনা কয়জন মাত্র। কিন্তু মদিনায় গিয়ে যখন মোহাম্মদ শক্তিশালী হলেন, একটা রাজ্য প্রতিষ্ঠা করলেন তখন তিনি সতর্ককারীর ভূমিকা থেকে আক্রমনকারী ও জোর করে ইসলাম প্রচারকারীতে পরিণত হলেন। এর রহস্য কি ? এর একটাই রহস্য তা হলো – তিনি তার কথিত আল্লাহর চেয়ে বেশী জ্ঞানী ও শক্তিশালী, মক্কায় থাকার সময় তাঁর আল্লাহ তাঁকে যেসব বানী দিয়েছিল তা মক্কায় কোন কাজে লাগেনি। দীর্ঘ ১০ বছর তিনি সতর্কীকরনের বানী নিয়ে মক্কার দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন কোন কাজ হয় নি, উল্টো জুটেছে লাঞ্ছনা, অপমান আর গঞ্জনা। লোকজন তার কথায় সতর্ক হয়ে তাঁর ইসলাম গ্রহণ করে নি। সুতরাং বোঝা গেল যে সতর্ককারীর ভূমিকা ছেড়ে অন্য পন্থা অবলম্বন করতে হবে।সে ভূমিকাটা হলো ছলে বলে কলে কৌশলে শক্তি অর্জন করতে হবে, বাহিনী গঠন করতে হবে, তারপরে মানুষের ওপর ঝাপিয়ে পড়তে হবে জিহাদী জঙ্গী জোশে।মদিনায় গিয়ে মোহাম্মদ ঠিক সে কাজটাই করেন আর ফলাফল আশাতীত। যে মোহাম্মদ ১০ বছর ধরে মক্কাতে তাঁর সতর্কবানী প্রচার করে মাত্র ৬০/৭০ জনও অনুসারী তৈরী করতে পারেন নি , সেই মোহাম্মদ মদিনায় যাওয়ার ১০ বছর পর ১০,০০০ অনুসারী নিয়ে মক্কা দখল করেন।তার অর্থ আল্লাহর পাঠানো সতর্কবানী ছিল ত্রুটিপূর্ণ বা ভুল পদ্ধতি বা শিক্ষা। কিন্তু মহাজ্ঞানী আল্লাহর শিক্ষা পদ্ধতি তো ত্রুটিপূর্ণ বা ভুল হতে পারে না। যদি ভুল হয়, তাহলে সে সর্বজ্ঞানী আল্লাহ নয়।

জোর জবরদস্তি ছাড়াও যে ধর্ম প্রচারিত হতে পারে তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আমরা দেখি খৃষ্টান ও বৌদ্ধ ধর্মে। যদিও দুটি ধর্মই ব্যপকভাবে প্রসার পায় যখন ধর্ম দুটি রাজ শক্তির সমর্থন পায়। তারপরেও এ দুটো ধর্মের প্রবর্তকগন যীশু ও গৌতম বুদ্ধ দুজনই জোর জবর দস্তি ছাড়াই তাদের ধর্ম প্রচার করে গেছেন এবং পরবর্তীতে সারা দুনিয়ার কোটি কোটি মানুষ এর অনুসারী হয়।একমাত্র ব্যতিক্রম মোহাম্মদের ইসলাম, তিনি তাঁর ইসলাম প্রচারের প্রাথমিক দিকে নিজেকে একজন স্রেফ সতর্ককারী হিসাবে দাবী করে পরে জোর জবরদস্তির পন্থা বেছে নেন যা সম্পূর্ণ সতর্কবার্তা প্রচারের বিপরীত এবং তাঁর নিজের তৈরী আল্লাহর বানীকে অস্বীকার করেন। তবে সেটা অস্বীকার করতে যেয়ে আবার আল্লাহর বানীকেই বেছে নিয়েছেন, যেমন- সূরা আত তাওবার জিহাদী আয়াত সমূহ (৯:৫,৯:২৯) আর এটা করে মোহাম্মদ তাঁর আল্লাহর অস্তিত্বকে প্রশ্ন বিদ্ধ করে প্রকারান্তরে নিজেই আল্লাহর ভূমিকায় আবির্ভূত হয়েছেন।মোহাম্মদের আল্লাহ যদি সর্বজ্ঞ শক্তিমান কোন ঈশ্বর হয়ে থাকে, তার তো জানার কথা যে আরব দেশে সতর্কবানীর মত বার্তা দিয়ে কোন লাভ হবে না, সেখানে দরকার জোর জবরদস্তি, জিহাদি পদ্ধতি। এছাড়া একজন সতর্ককারী কখনো নিজের ইচ্ছা অনিচ্ছার দ্বারা আল্লাহর বানী কিভাবে প্রভাবিত করতে পারে যেখানে সর্বজ্ঞ আল্লাহ নিজ থেকেই সব জানে কোন বানী কখন কোথায় কার জন্য প্রযোজ্য হবে ও দরকার হবে ? কিন্তু দেখা যায়, মোহাম্মদ এমন কি তার সাহাবীরা পর্যন্ত আল্লাহর বানীকে প্রভাবিত করেছে, অর্থাৎ মোহাম্মদ বা তার সাহাবিরা একটা আয়াত চাওয়ামাত্র তা সাথে সাথে নাজিল হয়ে যাচ্ছে, যেমন-

বারা বিন আযিব বর্ণিত- আল্লাহর রসূল বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে ষোল বা সতের মাস নামায পড়লেন কিন্তু তিনি কাবা ঘরের দিকে মুখ করে নামায পড়তে ইচ্ছা পোষণ করতেন, তাই আল্লাহ নাজিল করলেন এ আয়াত – নিশ্চয়ই আমি আপনাকে বার বার আকাশের দিকে তাকাতে দেখি। অতএব, অবশ্যই আমি আপনাকে সে কেবলার দিকেই ঘুরিয়ে দেব যাকে আপনি পছন্দ করেন। এখন আপনি মসজিদুল-হারামের দিকে মুখ করুন এবং তোমরা যেখানেই থাক, সেদিকে মুখ কর। যারা আহলে-কিতাব, তারা অবশ্যই জানে যে, এটাই ঠিক পালনকর্তার পক্ষ থেকে। আল্লাহ বেখবর নন, সে সমস্ত কর্ম সম্পর্কে যা তারা করে। (২:১৪৪) । সহি বুখারি, বই-৮, হাদিস-৩৯২

অতএব নিচের আয়াত নাজিল হয়ে গেল-

নিশ্চয়ই আমি আপনাকে বার বার আকাশের দিকে তাকাতে দেখি। অতএব, অবশ্যই আমি আপনাকে সে কেবলার দিকেই ঘুরিয়ে দেব যাকে আপনি পছন্দ করেন। এখন আপনি মসজিদুল-হারামের দিকে মুখ করুন এবং তোমরা যেখানেই থাক, সেদিকে মুখ কর। যারা আহলে-কিতাব, তারা অবশ্যই জানে যে, এটাই ঠিক পালনকর্তার পক্ষ থেকে। আল্লাহ বেখবর নন, সে সমস্ত কর্ম সম্পর্কে যা তারা করে।সূরা আল বারাকা-২:১৪৪

অর্থাৎ কাবা ঘরকে কিবলা বানান যে সঠিক ও আদর্শ বিধান তা আল্লাহ জানত না, আল্লাহ নিজেই জানত না কোন্ দিকে কিবলা করে নামাজ পড়া উত্তম, জানতে পারল তখন, যখন মোহাম্মদ বার বার আকাশের দিকে তাকাতে লাগলেন। আর জানার সাথে সাথেই ওহী নাজিল হয়ে গেল।এ থেকে কি আবারও প্রমানিত হয় না যে মোহাম্মদ হলেন তাঁর আল্লাহর চেয়ে বেশী জ্ঞানী ?

কেন কাবা ঘরের দিকে মুখ করে নামাজ পড়তে হবে এ প্রশ্নের যে উত্তর পাওয়া যায় তা হলো – কাবা ঘর আল্লাহর নির্দেশে তৈরী দুনিয়াতে প্রথম ঘর যা আদম কর্তৃক তৈরী হয়েছিল পরে ইব্রাহীম কর্তৃক পূন: নির্মিত হয়।তো তাই যদি হয় মোহাম্মদকে তাঁর আল্লাহ যখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম দিল তখন কেন বলে দিল না যে কাবা ঘরের দিকে মুখ করে নামাজ পড়তে হবে ? মোহাম্মদ তাঁর মক্কা জীবনের শেষে তাঁর কথিত মিরাজ ভ্রমনের সময় আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করেন আর তখন তাঁকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম দেয়।আর কাবা ঘরকে কিবলা বানানর আদেশ হয় এরও কম পক্ষে দেড় বছর পর মদিনাতে।শুধু মোহাম্মদ নয় , তার সাহাবীদের ইচ্ছাতেও ওহী নাজিল হতো, যেমন-

আয়শা বর্ণিত- নবীর স্ত্রীরা প্রাকৃতিক কাজে সাড়া দিতে বাইরে খোলা জায়গায় যেতেন। ওমর নবীকে বলতেন- আপনার স্ত্রীদিগকে পর্দার মধ্যে রাখুন। কিন্তু নবী তা রাখতে বলতেন না। এক রাতে সাওদা প্রাকৃতিক কাজে বাইরে গেলে ওমর তাকে দেখে ফেলে ও বলেন-আমি তোমাকে চিনে ফেলেছি, সওদা। ওমর প্রা্য়ই পর্দা প্রথা বিষয়ক আয়াত নাজিলের ইচ্ছা পোষণ করতেন। সুতরাং আল্লাহ হিজাবের পর্দা বিষয়ক আয়াত সমূহ নাজিল করেন। সহি বুখারি, বই-০৪, হাদিস-১৪৮

আয়াতটা নিম্নরূপ-
হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।সূরা আল আহযাব ৩৩:৫৯

নারীদেরকে যদি পর্দা প্রথা মেনে চলাই আদর্শ প্রথা হয়ে থাকে, তাহলে তা ওমরের ইচ্ছা মোতাবেক নাজিল হবে কেন ? সর্বজ্ঞ আল্লাহ কি জানে না যে কোন প্রথা নারীদের মান সম্মান রক্ষা করবে ? উক্ত হাদিস ও আয়াত দ্বারা বোঝা যাচ্ছে আল্লাহ নারীদের জন্য কোন প্রথা ভাল হবে তা জানতো না , এমনকি মোহাম্মদও জানতেন না। তাই ওমরের ইচ্ছা মোতাবেক উক্ত আয়াত নাজিল হয়।এতে এটা আরও পরিস্কার যে, মোহাম্মদ তার আল্লাহর চেয়ে বেশী ক্ষমতাধর কারন আল্লাহ যা জানত না , সেটা ওমরের কাছ থেকে জেনে নিয়ে মোহাম্মদ আল্লাহকে বাধ্য করেছে উক্ত আয়াত নাজিল করতে তথা নিজেই আয়াত নাজিল করেছে শুধুমাত্র ওমরের মত একজন শক্তিশালী সাহাবিকে সন্তুষ্ট করতে।

এখন আমরা যদি আব্রাহামিক ধর্মের অন্য সব নবীদের কাহিনী পড়ি দেখা যাবে তারা কখনই কোন সাহাবির কথায় আল্লাহর কাছ থেকে বানী আনে নি। বরং আল্লাহ তাদেরকে যে সব নির্দেশ দিয়েছে তারা তাদের অনুসারীদেরকে ঠিক সেটাই অনুসরণ করতে বলেছে। যদি তৌরাত কিতাব পড়া হয় সেখানে কখনই দেখা যাবে না ইব্রাহিম বা মূসা নবী কখনই কারও কথা বা চাহিদা শুনে আল্লাহর কাছে কোন আদেশ কামনা করছে।বরং আল্লাহই সময় সময় ইব্রাহিম বা মুসাকে কখন কি করতে হবে তা বলে দিচ্ছে আর তারা শুধুমাত্র সাধ্যমত পালন করার চেষ্টা করছে। যীশু খৃষ্টের গসপেল পড়লে দেখা যাবে তার সাথীরা ঘুনাক্ষরেও কখনো যীশুকে কোন বিধি বিধানের জন্য দাবী জানাত না। যে অনুরোধ করত তা হলো তাদেরকে বিপদে সাহায্য করতে। কারন তাদের বিশ্বাস ছিল মানুষের জন্য যেসব বিধি বিধান দরকার তা যীশু এমনিতেই তাদেরকে সময়মত বলে দেবেন। তারা সম্পূর্ণই নির্ভর করত যীশুর উপদেশ ও বিধানের ওপর। যীশু যে সব উপদেশ ও বিধানের কথা বলত তার অনুসারীরা তা সাধ্যমতো পালন করার চেষ্টা করত। অথচ মোহাম্মদের ক্ষেত্রে সম্পূর্ন উল্টো নিয়ম।মোহাম্মদের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, তার আল্লাহ তেমন কিছুই জানে না , বোঝে না, জানে না মোহাম্মদের অনুসারীদের জন্য কি কি বিধি বিধান দরকার।তাকে অপেক্ষা করতে হয় , মোহাম্মদ বা তার সাহাবিদের অনুরোধের অপেক্ষায়।অর্থাৎ অর্ডার মোতাবেক আল্লাহ মোহাম্মদকে ওহী সরবরাহ করে। আর সে ওহী আসে মোহাম্মদ বা তার সাহাবিদের আগে থেকেই করা পছন্দের ওপর ভিত্তি করে। এখন মোহাম্মদ বা তার সাহাবিদের পছন্দই যদি আল্লাহর পছন্দ হয়, তাহলে আল্লাহর সর্বজ্ঞতার পরিচয়টা কোথায়? আর এ ধরনের অজ্ঞ এক আল্লাহর বার্তা নিয়ে মোহাম্মদ মানুষদেরকে আল্লাহর ওহীর নামে সতর্ক করছেন বার বার , এটা কি সত্যিই আল্লাহর বার্তা, নাকি মক্কায় অবস্থান কারী দুর্বল মোহাম্মদের একটা কৌশল মাত্র? বা তার নবুয়ত্বের রিহার্সাল ?

মোহাম্মদের মক্কার জীবন লক্ষ্য করলে দেখা যায়, তখন তিনি আল্লাহর ওপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করতেন। যেকারনে যখন কুরাইশরা তাঁকে অপমান অপদস্ত করত তখন তিনি সব বিচার আল্লাহর হাতে সমর্পন করতেন।কারনটাও বোধগম্য। তখন মোহাম্মদের কোন লোকজন ছিল না, নিজের হাতে বিচার বা প্রতিশোধ গ্রহনের কোন উপায় তার ছিল না। সুতরাং আল্লাহর কাছে বিচার সপে দেয়া ছাড়া কোন গতি ছিল না। যেমন-

আমিও আহবান করব জাহান্নামের প্রহরীদেরকে।সূরা আলাক-৯৬:১৮ (মক্কার ১ম নাজিলকৃত সূরা)

অতএব, যারা এই কালামকে মিথ্যা বলে, তাদেরকে আমার হাতে ছেড়ে দিন, আমি এমন ধীরে ধীরে তাদেরকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাব যে, তারা জানতে পারবে না।সূরা কালাম-৬৮:৪৪ (মক্কায় ২য় নাজিলকৃত সূরা)

কাফেররা যখন কোরআন শুনে, তখন তারা তাদের দৃষ্টি দ্বারা যেন আপনাকে আছাড় দিয়ে ফেলে দিবে এবং তারা বলেঃ সে তো একজন পাগল।অথচ এই কোরআন তো বিশ্বজগতের জন্যে উপদেশ বৈ নয়।সূরা কালাম-৬৮:৫১-৫২ (মক্কায় ২য় নাজিলকৃত সূরা)

মক্কায় নাজিলকৃত দ্বিতীয় সূরাতে দেখা যাচ্ছে- কুরাইশরা তাঁকে পাগল বলে সাব্যাস্ত করেছিল আর তখন অত্যন্ত বিনয়ের সাথে মোহাম্মদের আল্লাহর বলছে যে কোরানের বানী মানুষের জন্য উপদেশ ছাড়া কিছুই নয়।

কাফেররা যা বলে, তজ্জন্যে আপনি সবর করুন এবং সুন্দরভাবে তাদেরকে পরিহার করে চলুন।বিত্ত-বৈভবের অধিকারী মিথ্যারোপকারীদেরকে আমার হাতে ছেড়ে দিন এবং তাদেরকে কিছু অবকাশ দিন।নিশ্চয় আমার কাছে আছে শিকল ও অগ্নিকুন্ড।গলগ্রহ হয়ে যায় এমন খাদ্য এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।সূরা মুজাম্মিল-৭৩:১০-১৩ ( মক্কায় ৩য় নাজিলকৃত সূরা)

হে চাদরাবৃত,উঠুন, সতর্ক করুন,(১-২)যেদিন শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে;সেদিন হবে কঠিন দিন,যাকে আমি অনন্য করে সৃষ্টি করেছি, তাকে আমার হাতে ছেড়ে দিন।(৮-১১)কখনই নয়! সে আমার নিদর্শনসমূহের বিরুদ্ধাচরণকারী।আমি সত্ত্বরই তাকে শাস্তির পাহাড়ে আরোহণ করাব।(১৬-১৭)আবার ধ্বংস হোক সে, কিরূপে সে মনঃস্থির করেছে!(২০)তঃপর সে ভ্রূকুঞ্চিত করেছে ও মুখ বিকৃত করেছে, অতঃপর পৃষ্ঠপ্রদশন করেছে ও অহংকার করেছে।এরপর বলেছেঃ এতো লোক পরস্পরায় প্রাপ্ত জাদু বৈ নয়,এতো মানুষের উক্তি বৈ নয়। আমি তাকে দাখিল করব অগ্নিতে।আপনি কি বুঝলেন অগ্নি কি?এটা অক্ষত রাখবে না এবং ছাড়বেও না।মানুষকে দগ্ধ করবে।(২২-২৯)।নিশ্চয় জাহান্নাম গুরুতর বিপদসমূহের অন্যতম,মানুষের জন্যে সতর্ককারী। (৩৫-৩৬)প্রত্যেক ব্যক্তি তার কৃতকর্মের জন্য দায়ী;কিন্তু ডানদিকস্থরা,তারা থাকবে জান্নাতে এবং পরস্পরে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।(৩৮-৪০)। সূরা-মুদ্দাসির ( মক্কায় ৪র্থ নাজিলকৃত সূরা)

নিশ্চিতই যারা কাফের হয়েছে তাদেরকে আপনি ভয় প্রদর্শন করুন আর নাই করুন তাতে কিছুই আসে যায় না, তারা ঈমান আনবে না।আল্লাহ তাদের অন্তকরণ এবং তাদের কানসমূহ বন্ধ করে দিয়েছেন, আর তাদের চোখসমূহ পর্দায় ঢেকে দিয়েছেন। আর তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি। সূরা বাকারা-০২:৬-৭ ( মক্কা ও মদিনা উভয় যায়গাতে নাজিলকৃত)

আর হে নবী (সাঃ), যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজসমূহ করেছে, আপনি তাদেরকে এমন বেহেশতের সুসংবাদ দিন, যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহমান থাকবে। যখনই তারা খাবার হিসেবে কোন ফল প্রাপ্ত হবে, তখনই তারা বলবে, এতো অবিকল সে ফলই যা আমরা ইতিপূর্বেও লাভ করেছিলাম। বস্তুতঃ তাদেরকে একই প্রকৃতির ফল প্রদান করা হবে। এবং সেখানে তাদের জন্য শুদ্ধচারিনী রমণীকূল থাকবে। আর সেখানে তারা অনন্তকাল অবস্থান করবে। সূরা বাকারা-২:২৫(মক্কা ও মদিনা উভয় যায়গাতে নাজিলকৃত)

যখন কুরাইশরা তাকে যাদুকর বলছে তখন কিন্তু আল্লাহ স্রেফ তাদেরকে আগুনে পোড়ানোর ভয় দেখাচ্ছে।পক্ষান্তরে যারা মোহাম্মদের কথা শুনবে তাদেরকে জান্নাতের লোভ দেখানো হচ্ছে যেখানে আছে নহর, নানা বিধ সুস্বাদু ফল ও নারী। এভাবে শত শত উদাহরণ দেখানো যাবে মক্কায় নাজিলকৃত সূরা থেকে।আর এসব আয়াতের সারমর্ম হলো দুর্বল মোহাম্মদ কাফেরদের বিচারের ভার তার আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন অকাতরে যা করা ছাড়া তার অন্য কোন উপায়ও ছিল না। অর্থাৎ তখন তিনি সত্যি সত্যি একজন সতর্ককারী বানীবাহক ছাড়া আর কিছুই নন।

দৃশ্যপটটা বদলে যায় মোহাম্মদের মদিনাতে প্রবাসী হওয়ার পর থেকেই।তখন আল্লাহর বানীও পাল্টে সম্পূর্ণ বিপরীত হয়ে যায়।মদিনায় যাওয়ার প্রথম দিক কার সূরার মধ্যে মধ্যে দু এক যায়গায় সতর্ককারী হিসাবে তার ভূমিকা উল্লেখ আছে সঙ্গত কারনেই আর তা হলো তখনও মোহাম্মদ মদিনাতে পুরো ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে পারেন নি।আসলে যা বোঝা যায় তা হলো – মোহাম্মদ ১০ বছর মক্কা জীবনে আল্লাহর ওপর নির্ভর করে ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে দেখলেন আসলে আল্লাহ কোন সাহায্যই করে নি।এর ওপর তার ওপর ছাতা ধরে থাকা খাদিজা ও আবু তালিব মারা যায়। তার পক্ষে তখন মক্কাতে থাকা অসম্ভব হয়ে দাড়ায়।আর তখন তার মনোজগতে পরিবর্তন ঘটে যায়। তিনি মক্কা ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে ঘাটি গাড়ার পায়তারা করেন। সুযোগও এসে যায়। তাঁর কিছু সাহাবী আগে থেকে মদিনাতে হিজরত করেছিল, যারা মদিনার গোত্র সর্দারদের সাথে পরামর্শ করে মোহাম্মদকে মদিনাতে আনার পরিকল্পনা করে।নানা ছলাকলা ও নাটকের সৃষ্টি করে অত:পর মোহাম্মদ মদিনাতে গমন করেন।মোহাম্মদ ও তাঁর দলবল মদিনাতে থাকার সময় সমস্যা দেখা দিল জীবিকা ধারনের উপায় নিয়ে।মদিনাবাসীরা ছিল কৃষিজীবি, কিন্তু মক্কার মোহাম্মদ ও তার দলবল কৃষিকাজ জানত না।মদিনাবাসীরা ছিল গরীব, মোহাম্মদের দলবলকে বসিয়ে বসিয়ে খাওয়ানোর মত অবস্থা তাদের ছিল না।মোহাম্মদ চিন্তা করলেন এত লোকের ভরণ পোষণ কেমনে চলবে। উপায়ও বের হয়ে গেল যথারীতি। মদিনার পাশ দিয়ে চলে গেছে মক্কাবাসীদের বানিজ্য করার পথ যা চলে গেছে সিরিয়া অবধি।মোহাম্মদ চিন্তা করলেন তার দল বল নিয়ে উক্ত বানিজ্য পথে ওত পেতে থাকবেন ও সুযোগ মত বানিজ্য কাফেলা আক্রমন করে তাদেরকে হত্যা করত: তাদের ধন সম্পদ লুটপাট করবেন।চিন্তা করতে যা দেরী, ওহী নাজিল হতে দেরী হয় নি।দেখা যাক কি কি ওহী নাজিল হলো এ বিষয়ে-

আর লড়াই কর আল্লাহর ওয়াস্তে তাদের সাথে, যারা লড়াই করে তোমাদের সাথে। অবশ্য কারো প্রতি বাড়াবাড়ি করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না।সূরা-আল বাকারা- ২: ১৯১
আর তাদেরকে হত্যাকর যেখানে পাও সেখানেই এবং তাদেরকে বের করে দাও সেখান থেকে যেখান থেকে তারা বের করেছে তোমাদেরকে। বস্তুতঃ ফেতনা ফ্যাসাদ বা দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করা হত্যার চেয়েও কঠিন অপরাধ। আর তাদের সাথে লড়াই করো না মসজিদুল হারামের নিকটে যতক্ষণ না তারা তোমাদের সাথে সেখানে লড়াই করে। অবশ্য যদি তারা নিজেরাই তোমাদের সাথে লড়াই করে। তাহলে তাদেরকে হত্যা কর। এই হল কাফেরদের শাস্তি।সূরা আল বাকারা- ২:১৯২
লড়াই কর, যে পর্যন্ত না ফেতনার অবসান হয় এবং আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হয়। অতঃপর যদি তারা নিবৃত হয়ে যায় তাহলে কারো প্রতি কোন জবরদস্তি নেই, কিন্তু যারা যালেম (তাদের ব্যাপারে আলাদা)সূরা আলা বাকারা-২:১৯৩
সম্মানিত মাসই সম্মানিত মাসের বদলা। আর সম্মান রক্ষা করারও বদলা রয়েছে। বস্তুতঃ যারা তোমাদের উপর জবর দস্তি করেছে, তোমরা তাদের উপর জবরদস্তি কর, যেমন জবরদস্তি তারা করেছে তোমাদের উপর। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রাখ, যারা পরহেযগার, আল্লাহ তাদের সাথে রয়েছেন।সূরা আল বাকারা-২:১৯৪

উপরের আয়াত গুলোই প্রথম জিহাদি আয়াত যা মোহাম্মদের নিকট মদিনাতে নাজিল হয়।প্রথমে এ আয়াত দিয়ে মোহাম্মদ ইসলামের নামে অমুসলিমদের সাথে যুদ্ধ করার অনুমোদন দেন, তাও খুব সতর্কভাবে, খেয়াল করতে হবে বলা হচ্ছে – আর লড়াই কর আল্লাহর ওয়াস্তে তাদের সাথে, যারা লড়াই করে তোমাদের সাথে। অবশ্য কারো প্রতি বাড়াবাড়ি করো না– এটুকু পড়লে কিন্তু মনে হতে পারে যে এতে তো কোন অন্যায় নেই।এটা তো আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধের কথাই বলছে। অর্থাৎ কেউ যদি আগ বাড়িয়ে মুসলমানদেরকে আক্রমন করে তাহলে মুসলমানরা আত্মরক্ষার স্বার্থে পাল্টা আক্রমন করবে- এটা যে কোন বিধানেই বৈধ ও ন্যয়সঙ্গত। কিন্তু পরের আয়াতেই সূর পাল্টে গেছে। বলা হচ্ছে- আর তাদেরকে হত্যাকর যেখানে পাও সেখানেই এবং তাদেরকে বের করে দাও সেখান থেকে যেখান থেকে তারা বের করেছে তোমাদেরকে– বলা বাহুল্য এ আয়তটা মোটেও আত্মরক্ষামূলক আয়াত নয়। অনেকে বলতে পারে এটা পূর্বোক্ত আত্মরক্ষামুলক আয়াতের ধারাবাহিকতায় বলা হচ্ছে। কিন্তু বিষয়টি মোটেও তা নয়।কারন হত্যা করতে বলা হচ্ছে একটা ঘটনার প্রেক্ষিতে আর সেটা হলো- তাদেরকে বের করে দাও সেখান থেকে যেখান থেকে তারা বের করেছে তোমাদেরকে।অর্থাৎ মোহাম্মদ তার সাহাবীদেরকে এই বলে উত্তেজিত করছেন যে তাদেরকে কুরাইশরা মক্কা থেকে বের করে দিয়েছে, তাই পাল্টা হিসাবে তাদেরও উচিত কুরাইশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদেরকে তাদের ঘরবাড়ী থেকে উচ্ছেদ করা ও হত্যা করা।কিন্তু বিষয়টা কি তাই ? মক্কা থেকে কুরাইশরা কাউকেই বের করে দেয় নি। মোহাম্মদের অনুসারীরা নিজেরাই সেখানে টিকতে না পেরে মদিনা, আবিনিসিয়া ইত্যাদি যায়গায় হিযরত করে চলে যায়।ইতিহাস থেকে জানা যায়, কুরাইশরা ছিল ধর্মীয় ব্যপারে ভীষণ উদার। মক্কা ও তার আশ পাশে ইহুদি ও খৃষ্টানরা শত শত বছর ধরে সহাবস্থান করত অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ অবস্থায়।মক্কার কাবা ঘর প্রাঙ্গনে হজ্জের সময় যে বিপুল লোকের সমাগম হতো সেখানে অনেক ইহুদি ও খৃষ্টান ব্যবসা করত।কুরাইশরা তাদেরকে কিছুই বলত না।মোহাম্মদ যখন নবুয়ত্ব দাবী করে তাঁর ইসলাম প্রচার শুরু করেন তখন সম্ভ্রান্ত কুরাইশরা তা মেনে নিতে অস্বীকার করে।প্রথম দিকে মোহাম্মদকে পাত্তা না দিলেও আস্তে আস্তে মোহাম্মদ তাদের মাথা ব্যথার কারন হয়ে দাড়ায়। সবচেয়ে বড় সমস্যা সৃষ্টি করে মোহাম্মদ যখন তাদের কাবা ঘরে যখন তখন ঢুকে তাঁর ইবাদত বন্দেগী করতেন এবং একই সাথে তাদের ধর্মকে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করতেন।কুরাইশ সর্দাররা বার বার তাকে কাবা ঘরে ঢুকে এ কাজ করতে নিষেধ করত ও বলত তার ইসলাম সে ঘরে বসেই প্রচার করুক।কিন্তু নাছোড় বান্দা মোহাম্মদ তাঁর প্রভাবশালী চাচা আবু তালিবের প্রশ্রয়ে থেকে এ কান্ড করে যেতেই থাকেন।আর তখনই কুরাইশরা মোহাম্মদ ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে একটা বয়কট ঘোষণা করে।তাদের সাথে সব রকম লেন-দেন, বৈবাহিক ও সামাজিক সম্পর্ক বন্দ করে দেয়।এটা করার অধিকার কুরাইশরা রক্ষন করে কারন মোহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা যদি কুরাইশদের ধর্মকে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করে তাহলে ব্যঙ্গ বিদ্রুপকারীদের বিরুদ্ধে এ ধরনের একটা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ তারা করতেই পারে। ঠিক এমতাবস্থায় মোহাম্মদের কিছু অনুসারী মক্কায় টিকতে না পেরে মদিনা আবিনিসিয়াতে চলে যায়। তাহলে কুরাইশরা তাদেরকে তাদের বাড়ী থেকে উচ্ছেদ করল কেমনে ? ঠিক এ বিষয়টাকেই অজুহাত হিসাবে দাড় করিয়ে মোহাম্মদ তাঁর সাথীদেরকে কুরাইশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য উস্কানি দিচ্ছেন তাঁর আল্লাহর ওহীর মাধ্যমে। কিন্তু বাস্তবে এটা যুদ্ধ নয়। কারন মুসলমানরা বাস করে মদিনাতে আর কুরাইশরা বাস করে মক্কাতে,তাদের মধ্যে দুরত্ব প্রায় সাড়ে তিনশ কিলোমিটার, আর মোহাম্মদ মক্কা ছেড়ে মদিনাতে গমন করাতে কুরাইশরা হাফ ছেড়ে বাঁচে। এখানে খেয়াল করতে হবে আলোচ্য আয়াতগুলো হলো সূরা বাকারার যার অধিকাংশই নাজিল হয়েছিল মক্কাতে, বাকি অংশ মদিনাতে। অর্থাৎ মোহাম্মদের মদিনায় যাওয়ার শুরুর দিকে আয়াতগুলো নাজিল হয়, আর তখনও মোহাম্মদ এমন কিছু শক্তিশালী হন নি যে তিনি হুংকার ছেড়ে মক্কাবাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারেন।তাহলে কোন্ ধরনের যুদ্ধের জন্য মোহাম্মদ উস্কানি দিচ্ছেন?

আসলে এটা কোন যুদ্ধই নয় বরং এটা হলো মদিনার পাশ দিয়ে যাওয়া মক্কাবাসীদের বানিজ্য কাফেলার ওপর চোরা গোপ্তা হামলা তথা ডাকাতি করার বিষয়।বলাবাহুল্য, পূর্বোক্ত আত্মরক্ষামূলক যে যুদ্ধের কথা বলা হয়েছে তার সাথে এ আয়াতের যুদ্ধের কোন সম্পর্কই নেই।অথচ আয়াতগুলো পাশাপাশি রাখা হয়েছে শুধুমাত্র ধোকা দিতে যাতে মানুষকে বোঝানো যায় যে পরবর্তী যে যুদ্ধের কথা বলা হয়েছে তা পূর্বোক্ত আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধের ধারাবাহিকতা। এত কিছুর পরেও বিষয়টি মদিনাবাসীদের মন:পুত হয় না, কারন তাদের অনেকেরই সম্পর্ক ছিল মক্কাবাসীদের সাথে।তারা মক্কা বাসীদের সাথে এ ধরনের শত্রুতা মূলক অপঘাত মূলক কাজে যেতে রাজি নয়, কোন রকম অজুহাত ছাড়া নিরীহ বানিজ্য কাফেলা আক্রমন করাটা তাদের কাছে নীতি বিগর্হিত মনে হয়েছিল।তাছাড়া তারা মোহাম্মদের মতি গতি সম্পর্কেও অত বেশী অবহিত ছিল না। তাই তারা দোটানায় ভুগছিল।তাছাড়া মক্কাবাসীদের সাথে তাদের কোন পূর্ব শত্রুতাও নেই যে যে কারনে তারা মোহাম্মদের সাঙ্গ পাঙ্গদের সাথে মক্কাবাসীদের বানিজ্য কাফেলা লুট করতে যাবে।অগত্যা মোহাম্মদ মক্কাবাসীদেরকে নিয়েই বানিজ্য কাফেলা আক্রমন করতে থাকেন। কিন্তু প্রথম কয়টি আক্রমনে সাফল্য আসে না। প্রাথমিক ব্যর্থতায় মোহাম্মদ মরিয়া হয়ে ওঠেন। যে কোন ভাবে হোক মদিনাবাসীদেরকে দলে না নিলে সাফল্য আসছে না। আর ঠিক তখনই শুধুমাত্র মদিনাবাসিদের লক্ষ্য করে নাজিল হয়ে যায় নীচের আয়াত-

তোমাদের উপর যুদ্ধ ফরয করা হয়েছে, অথচ তা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয়। পক্ষান্তরে তোমাদের কাছে হয়তো কোন একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়তোবা কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তোমাদের জন্যে অকল্যাণকর। বস্তুতঃ আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না।সূরা আল বাকারা-২:২১৬

কোন রকম ভাণ ভণিতা ছাড়াই আয়াতে বলা হচ্ছে যে নিরীহ বানিজ্য কাফেলার ওপর আক্রমন করার যে প্রক্রিয়া মোহাম্মদ আল্লাহর নামে শুরু করেছেন তা অনেকের কাছেই অপছন্দ।সেই লোকগুলো কারা? সহজেই বোঝা যায় তারা হলো মদিনাবাসী আনসাররা।তারা অনেকেই নও মুসলিম ও মোহাম্মদের মতি গতি অতটা জানতো না।বিনা কারনে তারা মক্কাবাসীর বানিজ্য কাফেলা আক্রমন করতে ছিল তারা নারাজ। তাই আয়াতে বলছে- তাদের কাছে অপছন্দ হলেও তা আখেরে মঙ্গলজনক। তা তো বটেই বানিজ্য কাফেলা আক্রমন করলে যে মালামাল দখল করা যাবে তা ভাগাভাগি করে নিলে বেশ আরাম আয়াশে চলা ফিরা করা যাবে, তাই তা মঙ্গলজনক বৈ কি!সুতরাং এর পর দোটানায় থাকা মদিনাবাসীরা মোহাম্মদের দলের সাথে যোগ দিয়ে বানিজ্য কাফেলা আক্রমন করতে যায়।

এখন লুটপাট করা মালামালকে বৈধ করা দরকার। কিভাবে লুটপাটকৃত মালামাল ভাগাভাগি করতে হবে সেটারও বিধান দরকার।নইলে মক্কাবাসি ও মদিনাবাসিরা মালামাল ভাগাভাগি নিয়ে নিজেদের মধ্যে মারামারি করতে পারে।তাই দেখা যাচ্ছে সুরা বাকারার ঠিক পরে নাজিল কৃত সূরা আনফালের আয়াতের একেবারে প্রথমেই তার বর্ণনা আছে অত্যন্ত সুন্দরভাবে।নাজিলের ক্রমিক অনুসারে সূরা বাকারার স্থান ৮৭তম। আর সুরা আনফালের স্থান ৮৮তম।সূরা নাজিলের ক্রমিক আছে এখানে- কোরানের সূরা নাজিলের ক্রমিক(http://www.qran.org/q-chrono.htm)

আপনার কাছে জিজ্ঞেস করে, গনীমতের হুকুম। বলে দিন, গণীমতের মাল হল আল্লাহর এবং রসূলের। অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং নিজেদের অবস্থা সংশোধন করে নাও। আর আল্লাহ এবং তাঁর রসূলের হুকুম মান্য কর, যদি ঈমানদার হয়ে থাক। সূরা আনফাল-৮:০১

আর এ কথাও জেনে রাখ যে, কোন বস্তু-সামগ্রীর মধ্য থেকে যা কিছু তোমরা গনীমত হিসাবে পাবে, তার এক পঞ্চমাংশ হল আল্লাহর জন্য, রসূলের জন্য, তাঁর নিকটাত্নীয়-স্বজনের জন্য এবং এতীম-অসহায় ও মুসাফিরদের জন্য; যদি তোমাদের বিশ্বাস থাকে আল্লাহর উপর এবং সে বিষয়ের উপর যা আমি আমার বান্দার প্রতি অবতীর্ণ করেছি ফয়সালার দিনে, যেদিন সম্মুখীন হয়ে যায় উভয় সেনাদল। আর আল্লাহ সব কিছুর উপরই ক্ষমতাশীল। সূরা আনফাল-৮:৪১

তার মানে মোহাম্মদ তার চাহিদা অনুযায়ী ওহী পেয়ে যাচ্ছে সাথে সাথেই আল্লাহর কাছ থেকে।অথবা অন্য কথায়,মোহাম্মদ বাধ্য করছেন আল্লাহকে ওহী পাঠাতে।সে ওহীটা কি ? লুটপাটের এক পঞ্চমাংশ পাবে আল্লাহ ও তাঁর রসুল।আল্লাহর তো কোন সম্পদ দরকার নেই, তাই সে অংশও যাবে মোহাম্মদের ভাগে। যদি স্বচ্ছভাবে চিন্তা করা হয়, তাহলে কি এটা সহজেই বোঝা যায় না যে, মোহাম্মদ বস্তুত তার পরিবার চালানোর জন্যই এ বিধান জারী করলেন? কারন তার ঘরে তখন কমপক্ষে কয়েকটা স্ত্রী ছাড়াও আছে ছোট ছোট কয়টি বাচ্চা আর তাদের ভরণপোষণ করা দরকার। অর্থাৎ দুনিয়ার শ্রেষ্ট মানব ও নবী মোহাম্মদের জীবিকা হলো অন্যের লুন্ঠিত সম্পদ।একই সাথে তার অনুসারীদেরও জীবিকা হলো অন্যের লুন্ঠিত সম্পদ। সোজা ভাষায় যাকে ডাকাতি করা বলে।কারন মদিনাতে জীবিকা অর্জনের অন্য কোন উপায়ই তাদের ছিল না। কোন ওয়াজ মাহফিল বা ইসলামি জলসায় বক্তারা কি কখনো এ বিষয়টি উত্থাপন করে? ভুলেও করে না, যদিও বা করে , এভাবে প্রচার করে যে সেসব ছিল যুদ্ধ আর সে যুদ্ধ শুরু করেছিল মক্কাবাসীরাই, মোহাম্মদ শুধুমাত্র আত্মরক্ষা করতে সে সব যুদ্ধ করেছিলেন।বস্তুত: সেসব মোটেও যুদ্ধ ছিল না, ছিল স্রেফ ডাকাতি। যুদ্ধ ও ডাকাতি দুটোর মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ।যদি সত্যি সত্যি কোন ঈশ্বরের কাছ থেকে মোহাম্মদ ওহী পেতেন , সেই ঈশ্বর কি কখনো তার শ্রেষ্ট নবী ও মানবকে ডাকাতি করে তার ওপর জীবিকা নির্বাহ করতে বলতেন ? জীবন ধারনের জন্য ডাকাতি কি আদর্শ পেশা?মোহাম্মদ তার অনুসারীদেরকে আল্লাহর বানীর নামে বিধান দিচ্ছেন ডাকাতি করে জীবন ধারন করতে, এ ডাকাতির নাম হলো আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ ও লুণ্ঠিত মালামালের নাম হলো গণিমতের মাল। আহ কি স্বর্গীয় বিধান আল্লাহর!

মোহাম্মদ যে সব বানিজ্য কাফেলায় আক্রমন করেছিলেন তার তালিকা পাওয়া যাবে – এখানে(http://en.wikipedia.org/wiki/Caravan_raids)

উক্ত ৮:১ ও ৮:৪১ আয়াত দুটি একই বিষয়ের ওপর বক্তব্য রেখেছে।গণিমতের মাল যখন বৈধ হলো তখন তার বন্টনটা কেমন হবে সেটাও সাথে সাথে বলা উচিত ছিল। অথচ দেখা যাচ্ছে ১নং আয়াতের পর ৪০টা আয়াত নাজিল হয়ে গেছে, আবোল তাবোল নানা কথার বর্ণনায়, অত:পর গণিমতের মালের বন্টন পদ্ধতির বর্ণনা করা হয়েছে। এ থেকে এটাও বোঝা যায়,হয় আল্লাহ এলোমেলোভাবে কোরানের আয়াত প্রেরণ করেছে অথবা কোরানের কোন একটি সূরাতে নাজিলকৃত আয়াতসমূহ সময় অনুযায়ী ধারাবাহিক ভাবে সংকলন করা হয়নি।এলোমেলো করে যেমন ইচ্ছা খুশি এমনকি হয়তবা এক সূরার আয়াত অন্য আয়াতেও ঢুকে গেছে। আল্লাহই যদি কোরানের বানীর প্রেরক ও সংরক্ষক হতেন, নিশ্চয়ই এমন এলোমেলোভাবে কোরানের বানী প্রেরিত বা সংকলিত হতো না। যদি ইহুদীদের তৌরাত, খৃষ্টানদের গসপেল, হিন্দুদের গীতা এসব কিতাব পরীক্ষা করি, তাহলে দেখা যাবে তাতে এধরনের কোনরকম অসংগতি বা এলো মেলো আগোছালো ভাব নেই।সুন্দর ধারাবাহিকতা বজায় আছে তাতে।এর কারনও সোজা এসব কিতাব যারা রচনা বা সংকলন করেছিল তারা আরবদের মত অশিক্ষিত মূর্খ ছিল না। বিদ্যা বুদ্ধিতে তারা ছিল তাদের আমলে সেরা। তাই তারা তাদের কিতাবকে অসংগতি ও অসামঞ্জস্যতা যতটা সম্ভব এড়িয়ে তা সংকলন বা রচনা করেছে।

মোহাম্মদের আল্লাহ কত দ্রুত তার আয়াতের বক্তব্য পাল্টাতে পারে তার একটা বড় নিদর্শন হলো নিচে:-

হে নবী, আপনি মুসলমানগণকে উৎসাহিত করুন জেহাদের জন্য। তোমাদের মধ্যে যদি বিশ জন দৃঢ়পদ ব্যক্তি থাকে, তবে জয়ী হবে দু’শর মোকাবেলায়। আর যদি তোমাদের মধ্যে থাকে একশ লোক, তবে জয়ী হবে হাজার কাফেরের উপর থেকে তার কারণ ওরা জ্ঞানহীন। সূরা আনফাল ৮:৬৫
এখন বোঝা হালকা করে দিয়েছেন আল্লাহ তা’আলা তোমাদের উপর এবং তিনি জেনে নিয়েছেন যে, তোমাদের মধ্য দূর্বলতা রয়েছে। কাজেই তোমাদের মধ্যে যদি দৃঢ়চিত্ত একশ লোক বিদ্যমান থাকে, তবে জয়ী হবে দু’শর উপর। আর যদি তোমরা এক হাজার হও তবে আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী জয়ী হবে দু’হাজারের উপর আর আল্লাহ রয়েছেন দৃঢ়চিত্ত লোকদের সাথে। সূরা আনফাল ৮:৬৬

৮:৬৫ বলছে বিশ জন মুসলমানকে আল্লাহ দু’শ মানুষের ওপর জয়ী হওয়ার ক্ষমতা দিয়েছে।ঠিক এর পরের আয়াতেই বলছে একশ জন জয়ী হবে দুশ জনের ওপর। সর্বশক্তিমান আল্লাহ যে কোন মানুষকে যে কোনরকম ক্ষমতা দিতে পারে।সুতরাং সে বিশজন মানুষকে দুশ জন শত্রুর ওপর জয়ী হওয়ার ক্ষমতাও দিতে পারে।অথচ অতি দ্রুত সে প্রতিশ্রুতি আল্লাহ ভুলে গিয়ে বা বাতিল করে দিয়ে পরে বলছে একশ মানুষকে দুশ শত্রুর ওপর জয়ী হওয়ার ক্ষমতা দিয়েছে। মনে হয় মানুষের মতই ভীষণ চঞ্চলমতি আল্লাহ, কখন কি বলে তার কোন ঠিক নেই।বিষয়টা অন্য ভাবেও দেখা যেতে পারে।মোহাম্মদ যখন তার অনুসারীদেরকে জিহাদি কাজে উৎসাহিত করতে আল্লাহর বানীর নামে তাদের বিশজনকে দুশ জন শত্রুকে পরাজিত করার কথা বলেছিলেন, সেটা খুব বেশী অবাস্তব ও অতিরঞ্জিত হয়ে গেছিল। তার অনুসারীরা সম্ভবত: বিষয়টি নিয়ে কানাঘুষা করছিল। কারন কোন পাগলে বিশ্বাস করবে যে ঢাল তলোয়ার বর্শা নিয়ে মাত্র বিশজন লোক তাদের মতই দুশজন লোককে পরাজিত করতে পারে ?অর্থাৎ মাত্র একজন মুসলমান পরাজিত করবে তারই মত দশজন শত্রুকে? চতুর মোহাম্মদ বিষয়টি বেশীদুর বাড়তে দেন নি, অতিদ্রুত আল্লাহকে তার বানী পরিবর্তন করে নতুন আয়াত পাঠাতে বলেন। বলতে যা দেরী, নতুন আয়াত নাজিল হতে কিন্তু দেরী হয়নি।সুতরাং পরবর্তী আয়াতে একজন মুসলমানকে দুইজন শত্রুর উপর জয়ী হওয়ার শক্তি দেয়া হলো।এ ধরনের অতি দ্রুত আয়াত পাল্টানো কি প্রমান করে যে মোহাম্মদ আসলে কোন এক আল্লাহর কাছ থেকেই ওহি প্রাপ্ত হতেন?

এত আলোচনার পর এখন পরিশেষে প্রশ্ন হলো – কে বড় , আল্লাহ নাকি মোহাম্মদ? আর মুসলমানরা কার কাছেই বা প্রার্থণা বা উপাসনা করে ?

আগের পর্বে দেখানো হয়েছিল কিভাবে মোহাম্মদ একেশ্বরবাদী ধর্ম প্রচার করার নামে আসলে জড়বাদী ধর্ম প্রচার করেছিলেন অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে।একজন মানুষের মুসলমান হওয়ার প্রথম শর্ত হলো –শাহাদা। শাহাদা হলো আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়, তার কোন শরিক নেই, মোহাম্মদ হলো তার রসূল- এটা স্বীকার করা। আরবীতে- লা ইলাহা ইল্লাহ আল্লাহ , মোহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ। এছাড়া মোহাম্মদের নাম উচ্চারণ করার সাথে সাথে বলতে হবে- সাল্লাহ আল্লাহ আলাইহে ওয়া সাল্লাম। সংক্ষেপে, যেমন- মোহাম্মদ(সা:)। আর এই সা: এর প্রচলিত অর্থ হলো- তাঁর ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। ইংরেজীতে Mohammad(PBUH- Peace Be Upon Him. কিন্তু আসলে কি এর অর্থ এটা ? এবার বিষয়টা ব্যখ্যা করা যাক।

বাক্যটি আরবীতে নিম্ন রূপে আসে।
صل الله علىه و سلم
তাহলে দেখা যাক বাংলায় অনুবাদ করলে কী দাড়ায়। মূলত এখানে আরবী و (ওয়াও) সংযোগ অব্যয় ব্যবহার করে দুইটি বাক্যকে একত্রে যোগ করা হয়েছে।
অর্থাৎ صل الله علىه (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে) হ’ল প্রথম বাক্য।
তারপর و (অ) হইল সংযোগ অব্যয়। এর অর্থ “এবং”। পরবর্তী বাক্যকে প্রথম বাক্যের সংগে সংযুক্ত করেছে।
দ্বিতীয় বাক্য হইল سلم (ছাল্লামা)
যেমন আমরা বংলায় বলতে পারি “সুমন গোছল করিল এবং ভাত খাইল।”
প্রথম বাক্য- صل الله (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি)-
এখানে صل (ছাল্লা) শব্দটি ক্রীয়াপদ। এটা এসেছে আরবী صلوات (ছালাত) শব্দ থেকে। যার সোজা সাপটা অর্থ হইল নামাজ, প্রার্থনা,প্রশংসা, বড়ত্ব প্রকাশ, মাথা নত করা (যেমন রুকু,ছেজদা তে করা হয়)
এরপরে الله (আল্লাহু) শব্দ টা হইল এই ক্রীয়াটির কর্তা পদ।
এরপর علىه (আলাইহি) যৌগ শব্দটি কর্মপদ, على (আলা অবয়)এবং ه (হি) সর্বনাম যুক্ত হয়ে হয়েছে।
এর অর্থ “তাহার (নবীর)উপর”
অতএব প্রথম বাক্যের পূর্ণ অর্থ দাড়াল “আল্লাহ তাহার (নবীর) উপর صلوات (ছালাত) করুন।
আর দ্বিতীয় বাক্য-
سلم (ছাল্লামা)- অর্থ “শান্তি বর্ষিত করুন”
তাহলে পূর্ণ বাক্যটির সোজা সাপটা অর্থটি এরুপ দাড়াল,
“আল্লাহ তাহার (নবীর) উপর صلوات ছালাত) করুন, ও শান্তি বর্ষিত করুন”
অর্থাৎ – আল্লাহ নবীর ওপর প্রার্থনা করুন ও শা্ন্তি বর্ষন করুন। (অনুবাদক- আ: হাকিম চাকলাদার)

অনেককে প্রশ্ন করে যে উত্তর পাওয়া গেছে তা হলো – আল্লাহ নবীর ওপর আশীর্বাদ ও শান্তি বর্ষন করুন।
কিন্তু সাল্লাহ অর্থ হলো প্রার্থনা করা , কোনমতেই আশীর্বাদ বর্ষন করা নয়। বারাকা অর্থ হলো আশীর্বাদ। আর উক্ত দোয়াতে সোজা সাপ্টা সাল্লাহ শব্দটিই আছে বারাকা শব্দ নেই। তার অর্থ ইদানিং কিছু কিছু লোক বিষয়টি জানতে পেরে আসল অর্থ পরিবর্তন করার অপচেষ্টায় আছে বোঝা যাচ্ছে।

যাহোক, তার অর্থ স্বয়ং আল্লাহ মোহাম্মদের ওপর প্রার্থনা করছে।এই প্রথম শোনা গেল যে স্বয়ং সর্ব শক্তিমান আল্লাহ কারও ওপর প্রার্থনা করতে পারে। এতদিন জেনে এসেছি যে আল্লাহর বান্দারাই আল্লাহর ওপর প্রার্থনা করে থাকে। আর আল্লাহ তার বান্দাদের ওপর আশীর্বাদ বা শান্তি বর্ষায়। এখন যেহেতু আল্লাহ মোহাম্মদের ওপর প্রার্থনা করে তাহলে বড় কে, মোহাম্মদ নাকি আল্লাহ? এছাড়া আর একটা বড় প্রশ্ন- উক্ত বাক্যটির অর্থ শুধুমাত্র তার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক এভাবে কেন করা হয় ? বাক্যের প্রথম অংশটির অর্থ গোপন করা হয় কেন ? তাহলে মুসলমানরা কার কাছে প্রার্থনা করে ? মোহাম্মদ বলেছেন আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে। মুসলমানরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে , আর আল্লাহ প্রার্থনা করে মোহাম্মদের ওপর, তার অর্থ ইসলাম যদি সত্য ধর্ম হয়, তাহলে এখানে আল্লাহ শুধুমাত্র একটা মাধ্যম যার মাধ্যমে সকল মুমিন মুসলমানের দোয়া ও প্রার্থনা মোহাম্মদের কাছে পৌছবে আর মোহাম্মদ সর্ব শক্তিমান সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বরের ভূমিকায় অধিষ্ঠিত হয়ে সবার বিচার করবেন কেয়ামতের মাঠে। তাহলে যে বলা হয়- আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয় – এর অর্থ কেমন হবে? এটা তো ঠিকই আছে আল্লাহ তো একজনই আর সে হলো মোহাম্মদের কাছে পৌছানোর মাধ্যম।

এছাড়াও আরও একটা ব্যপার আছে, যেমন নিচের আয়াত-

যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তা’ আলার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা।সূরা ফাতিহা-০১:০২

উপরের আয়াতে বলা হচ্ছে- সব প্রশংসাই আল্লাহ তালার।অর্থাৎ অন্য কাউকে প্রশংসা করা যাবে না।একমাত্র আল্লাহই হলো সকল প্রশংসার দাবিদার। এখন মোহাম্মদ অর্থ কি ? মোহাম্মদ শব্দের যে অর্থ পাওয়া গেল তা নিম্নরূপ:

GENDER: Masculine
USAGE: Arabic
OTHER SCRIPTS: محمّد (Arabic)
PRONOUNCED: moo-HAH-med [key]
Meaning & History
Means “praiseworthy”, derived from Arabic حمد (hamid) “to praise”. This was the name of the prophet who founded the Islamic religion in the 7th century. Since his time, it has been very popular in the Muslim word.
সূত্র: http://www.behindthename.com/name/muhammad

বাংলা করলে মোহাম্মদ শব্দের অর্থ দাড়ায় প্রশংসনীয় বা প্রশংসিত অর্থাৎ যে ব্যক্তিকে প্রশংসা করা হয় সেই ব্যক্তি হলো মোহাম্মদ। তাহলে দুজনকে পাওয়া গেল যাদেরকে প্রশংসা করতে হবে। সকল প্রশংসা যে আল্লাহর এবং কোন ব্যক্তি মানুষকে প্রশংসা করা যাবে না এটার বহু বিবরণ হাদিসে আছে(যারা কোরান হাদিস পড়ে নি তারা এ ধরনের কথা শোনা মাত্রই ক্ষেপে উঠতে পারে কারন তারা প্রথমে বিশ্বাসই করতে চাইবে না যে কোন ব্যক্তিকে তার একটা ভাল কাজের জন্য প্রশংসা করা যাবে না), যেমন-

আবু মুসা বর্নিত: আল্লাহর নবী একজন মানুষকে অপর একজন মানুষ সম্পর্কে প্রশংসা করতে দেখলেন এবং বললেন- তুমি তাকে হত্যা করলে বা তাকে কেটে টুকরো টুকরো করে ফেললে। সহি মুসলিম, হাদিস -৭১৪১

ঠিক একই রকম হাদিস বর্ণিত আছে- ৭১৩৮,৭১৩৯,৭১৪০,৭১৪২ ও ৭১৪৩ এ। অর্থাৎ বহু সংখ্যক একই রকম হাদিস আছে যা দ্বারা প্রমানিত হচ্ছে এটা শতভাগ সহি হাদিস যাতে কোনই সন্দেহ থাকতে পারে না।

যাহোক, আল্লাহ নিজে দাবী করছে সব প্রশংসাই তার অর্থ আর কারও জন্য প্রশংসা অবশিষ্ট নেই। অন্যদিকে মোহাম্মদ নিজেই প্রশংসিত অর্থাৎ তাকে প্রশংসা করা হয়েছে।এখন যেহেতু সব প্রশংসা আল্লাহর ,অথচ মোহাম্মদ হলেন প্রশংসিত ব্যাক্তি অর্থাৎ আল্লাহর দাবীকৃত সকল প্রশংসার মধ্যে ভাগ বসিয়েছেন তাহলে বিষয়টা দাড়ায়-হয় মোহাম্মদ আল্লাহর শরিক অথবা খোদ মোহাম্মদ নিজেই আল্লাহ।অথচ কোরান বার বার বলেছে আল্লাহর কোন শরিক নেই। তাহলে অবশেষে বিষয়টা কি দাড়াল? হয় মোহাম্মদ আল্লাহর চাইতে বড় কিছু নয়ত মোহাম্মদই কি স্বয়ং আল্লাহ নয় ? এবং মুসলমানরা মূলত: মোহাম্মদের কাছেই প্রার্থনা করে ?

ঠিক একারনেই কি মুসলমানদের কাছে আল্লাহর চেয়ে মোহাম্মদের গুরুত্ব অনেক বেশী? একারনেই আল্লাহকে নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করলে তারা কিছুই মনে করে না ,কিন্তু মোহাম্মদের সামান্য সমালোচনা করলেই জঙ্গি জোশে ঝাপিয়ে পড়ে হত্যা লীলা চালিয়ে সব কিছু ধ্বংস করে দিতে চায় ?

বাংলা কোরান
বাংলা কোরান
বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ ও মালিক মুয়াত্তার হাদিস
শুধুমাত্র বুখারী শরিফ
ইবনে কাথিরের বাংলা তাফসীর
বাংলা বাইবেল
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১৮
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১৭
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১৬
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১৫
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১৪
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১৩
মোহাম্মদ ও ইসলাম , পর্ব-১২
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১১
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-10
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-9
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-8
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-7
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-6
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-5
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-4
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-3
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-2
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-1